নথি : ভূ-গর্ভস্থ জলের বাণিজ্যিক ব্যবহারে নয়া বিধিনিষেধ; কৃষিকে ছাড়

[সম্প্রতি খেয়াল করা যাচ্ছে, টিভি মিডিয়া থেকে ফেসবুক — সর্বত্র নানা বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক হচ্ছে, বিষয়গুলো তথ্যনির্ভর, কিন্তু কোনো তথ্যভিত্তিক তর্কবিতর্ক হচ্ছে না। পারসেপশন বা ধারনা থেকে তর্ক বা মতামত চলে আসছে, যার ভিত্তি মনগড়া। এই ‘উত্তরসত্য’ বা ‘পোস্ট ট্রুথ’ সমাজতর্ক-কে প্রতিরোধ করার জন্য এবার থেকে সাইটে বিতর্কিত নানা বিষয়ে নথি এবং তথ্য প্রকাশ করা হবে। সামান্য ভূমিকা সহ। — সম্পাদক]

২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের গেজেট নোটিফিকেশন অনুসারে ২০১৯ এর ১ জুন থেকে ভূ-গর্ভস্থ জলের বাণিজ্যিক এবং গৃহস্থালীর ব্যবহারে কিছু নতুন বিধিনিষেধ চালু হয়েছে। বিধিনিষেধগুলির আওতা থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বাদ পড়েছে কৃষি। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রতি বছর যে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হয়, তার ৯০ শতাংশ ব্যবহার হয় কৃষিতে সেচের কাজে। বাকি ৫ শতাংশ ব্যবহার হয় ইন্ডাস্ট্রিতে এবং ৫ শতাংশ গৃহস্থালীর কাজে। নিচে সেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির ফাইল রইল, এবং ছবি।

বিধিনিষেধে ‘জল সংরক্ষণ ফি’ নামে একটি ফি-এর ব্যবস্থার কথা বলা আছে বাণিজ্যিকভাবে যারা ভূগর্ভস্থ জল তুলছে, তাদের জন্য। এছাড়াও এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেটেরও কিছু কড়া বিধি ঢোকানো হয়েছে। সঙ্কটজনক, অতিসঙ্কটজনক, নিরাপদ এবং আধা সঙ্কটজনক এইরকম ভাগে ভাগ করে দৈনিক জল-তোলার মাপ অনুযায়ী বেশি তুললে বেশি ফি — এইভাবে জল সংরক্ষণ ফি-র বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। অবশ্য সঙ্কটজনক ও অতিসঙ্কটজনক এলাকায় ভূগর্ভস্থ জল বাণিজ্যিকভাবে একেবারেই না তোলার যে দাবি, তা না মেনে, চড়া দাম দিয়ে তোলার অনুমতি দেওয়া হল — এইভাবেও এই বিধিনিষেধকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। সঙ্কটজনক এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জল তোলার অনুমতিপত্রের সময়সীমাও ২ বছরে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, গৃহস্থালীর প্রয়োজনে যদি একই বাড়িতে একাধিক মোটরচালিত পাম্প বসানো হয়, সেক্ষেত্রেও অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়েছে এবং একইসাথে মাসিক একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি জল তুললে ‘জল সংরক্ষণ ফি’ রাখা হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার জন্য সবাইকেই সেখানকার ভূগর্ভস্থ জলস্তর মাপক বসানো, জলের মিটার বসানো এবং বৃষ্টির জল সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করা বাধ্যতামূলক হয়েছে। একমাত্র কৃষির জন্য ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলনকে এই সমস্ত বিধিনিষেদের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। যদিও আমাদের দেশের বড়ো কৃষকরা মূলতঃ বাণিজ্যিক কারণেই কৃষি উৎপাদন করেন। নিচে নয়া বিধিনিষেধের গেজেট নোটিফিকেশনের ফাইল, এবং কিছু ছবি রাখা হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *