প্রশ্নোত্তরে প্যালেস্তাইনের ওপর ইজরায়েলের যুদ্ধ (২০২৩) : প্যালেস্তাইনিরা কি জঙ্গী স্বাধীনতা সংগ্রাম চায়?

ইজরায়েলের প্যালেস্তাইনের ওপর যুদ্ধ শুরু হয়েছে ৮ অক্টোবর, যার পোশাকি নাম ‘লোহার তরোয়াল’ । তাতে এখনও অব্দি ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গাজা ভূখণ্ডে প্রায় সাত হাজার মানুষ মারা গেছে যাদের প্রায় সবাই নিরস্ত্র নাগরিক, এবং প্রায় অর্ধেক অপ্রাপ্তবয়স্ক। আমরা কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে এই যুদ্ধ সম্পর্কে জানাবোঝা করতে চাইছি। পাঠকদের কাছে আবেদন, আরো প্রশ্ন করুন, এবং উত্তরগুলি সম্পর্কে মতামত দিন। প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়েছিল এখানে। এটা দ্বিতীয় পর্ব। সঙ্গের ছবিটি ২০২১ সালের জুন মাসের, গাজায় হামাসের একটি মিটিং-এর। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া ছবিটি তুলেছিলেন এপি সংবাদসংস্থার চিত্রসাংবাদিক — সম্পাদকমণ্ডলী।

৫) হামাস কি প্যালেস্তাইনবাসীর ওপর ‘জঙ্গী স্বাধীনতা আন্দোলন’-এর বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে না ?

১৯৪৮ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্র গঠিত হয়। ১৯৬৭ সালের আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে ইজরায়েল জিতে যাওয়ার পর ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং গাজা-র বিস্তীর্ণ প্যালেস্তিনীয় ভূখণ্ড ইজরায়েল রাষ্ট্র দখল করে। ইজরায়েল রাষ্ট্রে এবং অধিকৃত ভূখণ্ডে কায়িক শ্রমের কাজগুলিতে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল কিন্তু উচ্চশিক্ষিত প্যালেস্তিনীয় যুবকদের নিয়োগ হয় ব্যাপকভাবে1। একদিকে নিজেদের সার্বভৌমত্ব না থাকা এবং আগের দশকগুলিতে প্রায় অর্ধেক জনতার উদ্বাস্তু হবার ক্ষত, অন্য দিকে ইজরায়েলি সমাজে ব্যাপক আরব-বিদ্বেষ ও প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো ব্যবহার — সব মিলিয়ে প্যালেস্তিনীয় সমাজে ইজরায়েলবিরোধী তীব্র ক্ষোভ জমা হতে থাকে।

প্রথম দিকে এই ক্ষোভের হিংসাত্মক প্রকাশ থাকলেও দু-দশক পর ইয়াসের আরাফতের ফাতা সংগঠন সহ আরো বেশ কিছু সংগঠনের নেতৃত্বে এই ক্ষোভ স্বাধীনতার দাবিতে গণ-আন্দোলন হিসেবে বিকশিত হয়। হামাস তৈরি হয়েছিল ১৯৮৭ সালে, মূলতঃ প্যালেস্তাইনের জঙ্গী ইসলামিস্ট রাজনীতি হিসেবে, যে রাজনীতি শুধু প্যালেস্তাইন নয়, আরবভূমিতে তার আগে থেকেই মাথা চাড়া দিয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল তীব্র গণ-আন্দোলন যা প্রথম অভ্যুত্থান বা ইন্তিফাদা নামে পরিচিত। ইজরায়েলের উসকানি সত্ত্বেও এই ইন্তিফাদা ছিল মূলতঃ শান্তিপূর্ণ, তাই হামাস প্যালেস্তাইনি জনসমর্থন পায়নি। এই আন্দোলন সফলভাবে প্যালেস্তাইন ইজরায়েল সমস্যার সমাধানের দিকে এগোয় ও প্যালেস্তাইনি অংশের স্বায়ত্বশাসন স্বীকৃত হয়। এই সমাধানের মূল সূত্র ছিল — ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, জেরুজালেম ও গাজা নিয়ে স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়া এবং বাকি অধিকৃত জায়গায় ইজরায়েল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি; প্যালেস্তাইনি উদ্বাস্তুদের ফিরে আসার অধিকারের স্বীকৃতি; অধিকৃত অঞ্চলে ইজরায়েলি সেটলমেন্ট ধীরে ধীরে প্রত্যাহার; প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে হিংসা প্রত্যাহার। কিন্তু তুলনায় অনেক শক্তিশালী ইজরায়েল রাষ্ট্র ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সমস্যার সমাধান চায়নি, তারা অধিকৃত ভূখণ্ডে নতুন নতুন সেটলমেন্ট তৈরি করতেই থাকে।

সার্বভৌমত্ব সহ অন্যান্য সমাধান প্রক্রিয়া না এগোনোয় শান্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশ হতে থাকা প্যালেস্তাইনি সমাজে ধীরে ধীরে হামাস শক্তিশালী হতে থাকে। ২০০০ সালে আমেরিকার নেতৃত্বে সমাধান প্রয়াস ব্যর্থ হলে প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতা আন্দোলন তার শান্তিপূর্ণ পথ ত্যাগ করে হিংসাত্মক পথ নেয়, শুরু হয় দ্বিতীয় অভ্যুত্থান বা ইন্তিফাদা। এই পর্যায়ে প্যালেস্তাইনি জনতার মধ্যে হামাস আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং গাজা অংশে তারা বেশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ইজরায়েলের তরফেও প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল শক্তি ও প্যালেস্তাইনের স্বায়ত্বশাসনের ‘প্যালেস্তাইনি কর্তৃপক্ষ’কে দুর্বল করার প্রয়াসে বিরোধী সংগঠন হামাসকে ইন্ধন দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে ‘প্যালেস্তাইনি কর্তৃপক্ষ’ তথা এতাবৎকালের প্যালিস্তাইনি স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা ইয়াসের আরাফত মারা যান। ২০০৫ সালে ইজরায়েল এককভাবে গাজা ভূখণ্ড থেকে নিজেদের সৈন্য ও সেটলমেন্ট প্রত্যাহার করে নেয়, কিন্তু ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং জেরুজালেম-এ দখল বজায় রাখে2

২০০৬ সালে প্যালেস্তাইনের স্বায়ত্বশাসন কর্তৃপক্ষের নির্বাচন হয়, তাতে সারা পৃথিবীকে অবাক করে বিরোধী হামাস বিপুলভাবে জিতে যায়। ভূতপূর্ব শাসক সংগঠন ফাতা দ্বিতীয় স্থান পায়। হামাস ও ফাতা-র মিলিজুলি ‘প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ’ তৈরির প্রয়াস ব্যর্থ হয় এবং গৃহযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ২০০৭ সালে গাজা ভূখণ্ডটির ক্ষমতা দখল করে নেয় হামাস। তারা ইজরায়েল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ভিত্তিক সমাধান বাতিল করে দেয় এবং ষাটের দশকে জঙ্গী প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতা আন্দোলনের যে দাবি, জর্ডন নদী থেকে ভূমধ্যসাগর অবদি পুরো প্যালেস্তাইনের মুক্তিকে লক্ষ্য বলে ঘোষণা করে। শুরু হয় গাজা থেকে হামাসের নেতৃত্বে জঙ্গী তথা হিংসাত্মক স্বাধীনতা আন্দোলন। অপরদিকে ফাতা সহ অন্যান্য সমঝোতাপন্থীদের ‘প্যালেস্তাইনি কর্তৃপক্ষ’ ইজরায়েল অধিকৃত জেরুজালেম ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের স্বায়ত্ত্বশাসক হিসেবে থাকে, যদিও যতদিন গেছে তারা দুর্বল হতে হতে গেছে এবং ইজরায়েলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার আন্দোলনকে আর এগোতে পারেনি তো বটেই, বছরের পর বছর ধরে তাদের কর্তৃত্বও কমেছে।

৬) প্যালেস্তাইনিরা কি হামাসের সঙ্গে আছে ?

প্যালেস্তাইনি সমীক্ষা অনুসারে, ২০২১ সালের মে মাসের এগারো দিনের যুদ্ধের পর থেকে বেশিরভাগ প্যালেস্তাইনি হামাসকে সমর্থন করে, তার আগে পর্যন্ত ফাতাহ-র সমর্থন একটু হলেও হামাসের চেয়ে বেশি ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের সমীক্ষা অনুসারে, প্রায় সত্তর শতাংশ প্যালেস্তাইনবাসী মনে করে, ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন দুই সার্বভৌম রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান আর সম্ভব নয়, কারণ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ইজরায়েলি সেটলমেন্ট এখন অনেক বেড়ে গেছে। প্রায় বাহাত্তর শতাংশ প্যালেস্তাইনি মনে করে, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলা দরকার ইজরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনী আর সেটলারদের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য। ২০২২ ও ২০২৩ সালের ত্রৈমাসিক সমীক্ষাগুলিতে দেখা গেছে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পক্ষে প্যালেস্তাইনি জনসমর্থন বেড়েই চলেছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৪৮% প্যালেস্তিনীয় হিংসাত্মক প্রতিরোধের পক্ষে ছিল, তা ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে। তৃতীয় অভ্যুত্থান বা ইন্তিফাদা আসন্ন, এই মত পোষণকারী প্যালেস্তিনীয়-র সংখ্যা ২০২৩ সালের সমীক্ষাগুলিতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে

২০২১ সাল থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে প্যালেস্তিনীয় মহল্লাগুলিতে ইজরায়েলি রাষ্ট্রের দমন পীড়ন বেড়ে যায়। ২০২২ সালে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও জেরুজালেমে ইজরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনীর হামলায় ২৩০ জন প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়, এবং তা ২০০৫ সালের পর (অর্থাৎ দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শেষ হবার পর) সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের প্রথম কয়েক মাসে দেখা যায়, এর হার ২০২২ সালের তুলনায় তিনগুণ। একইসাথে প্যালেস্তিনীয় জঙ্গী হামলায় নিহত ইজরায়েলির সংখ্যাও (অক্টোবর মাসের সাত তারিখের আগে পর্যন্ত) প্রায় পঞ্চাশ। এইসব পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার, ২০২২-২৩ সালে প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র প্রতিরোধ এবং ইজরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনীর অত্যাচার বেড়েছে। উদাহরন স্বরূপ, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জেনিন উদ্বাস্তু পল্লিতে ইজরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনী হামলা চালিয়ে ১২ জনকে হত্যা করে এবং প্রায় পাঁচশ প্যালেস্তিনীয় ফের উদ্বাস্তু হয়। গত কয়েক বছরে প্যালেস্তিনীয় সমাজও একটু একটু করে সশস্ত্র প্রতিরোধের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামকে বরণ করেছে এবং স্বাভাবিকভাবেই হামাসের জনসমর্থন বেড়েছে, বিশেষতঃ কমবয়সীদের মধ্যে।

হামাসের সামরিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক শাখা আছে। সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেড এর নেতৃত্বে গাজার মাটির নিচ দিয়ে বেদুইনদের পুরনো স্মাগলিং-এর সুরঙ্গগুলিকে শক্তপোক্ত করে এবং অনেক প্রসারিত করে চলাচলের পথ বানানো আছে, যাকে বলে ‘গাজা মেট্রো’। এখানে ল্যান্ডলাইন টেলিফোনের মধ্যে দিয়ে যোগাযোগ রাখে হামাস যোদ্ধারা যাতে ইজরায়েল তা ধরতে না পারে। এভাবে ইজরায়েলি নিরাপত্তা প্রযুক্তিকে ফাঁকি দিয়ে হামাস তার সশস্ত্র লড়াই জারী রাখে। ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের নেতৃত্বে সশস্ত্র প্রতিরোধ এবং ফলস্বরূপ বড়ো আকারে ইজরায়েলের প্যালেস্তাইনের ওপর যুদ্ধ হয়েছে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে। এছাড়াও স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধ অনেক হয়েছে, যেমন ২০২১ সালের কথা বলা হলো ওপরে।

৭) কই ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-এ তো যুদ্ধ হচ্ছে না?

ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক আলঙ্কারিকভাবে প্যালেস্তাইনি কর্তৃপক্ষের হস্তগত থাকলেও আসলে তার আশি শতাংশই ইজরায়েলি সামরিক নিয়ন্ত্রণাধীন এবং ষাট শতাংশে প্যালেস্তাইনি বসতি প্রায় নেই বললেই চলে। যেটুকু যা প্যালেস্তাইনি বসতি রয়েছে, তা ইজরায়েলি সেনা বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ফলে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে টুকরো টুকরো ভাবে কিছু অংশে খাঁচায় বন্দী থাকার মতো প্যালেস্তাইনিরা থাকে এবং তাদের প্রশাসন সেইটুকুতেই চলে, যার বাইরে ইজরায়েলি সৈন্যরা পাহারা দেয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। বাকি অংশে ইজরায়েলি বসতি বা সেটলমেন্ট প্রতি বছর বেড়েই চলেছে। ফলে নিরঙ্কুশ প্যালেস্তাইনি জনসংখ্যার কারণে গাজা ভূখণ্ডটির যে সত্যিকারের স্বায়ত্বশাসন আছে (২০০৫ সালে ইজরায়েল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিজেদের বসতি ভেঙে দেওয়ার কারণে), ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে বসবাসকারী প্যালেস্তিনীয়দের তা নেই। সেখান থেকে সশস্ত্র প্রতিরোধ বা রকেট হামলা চালানো সম্ভবই নয়। যদিও আমরা আগের প্রশ্নের উত্তরে দেখলাম, গত কয়েক বছরে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে সশস্ত্র প্রতিরোধের সংগঠনের চাহিদা বেড়েছে এবং তৈরিও হচ্ছে, তবুও তা খুবই প্রাথমিক স্তরে। ইজরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী স্রেফ হামলা চালিয়েই সেগুলো ভেঙে দিতে পারে, যেমন জেনিন উদ্বাস্তু শিবিরে হামলার কথা আমরা পড়লাম আগের প্রশ্নের উত্তরে। গাজার মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে যুদ্ধ করতে হয় না ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীকে। ফলে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ‘যুদ্ধ হচ্ছে না’।

চলবে

টিকা

  1. ২০০৫ সালে প্রকাশিত একটি বই আছে ইজরায়েলের কাজে প্যালেস্তিনীয়দের নিয়োগ নিয়ে। ↩︎
  2. ইজরায়েলের ভূগোল নিয়ে গবেষণা করা একজন ইজরায়েলি প্রফেসর এলিশা এফরাত এর একটি বই আছে গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ভূগোল নিয়ে। সেখানে ১৯৬৭ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ভূগোল পর্যালোচনা করে ইজরায়েলি দখল ও গাজা থেকে সরে আসার চিত্তাকর্ষক বিবরণ আছে। এছাড়া নেভ গর্ডনের বই-তে ইজরায়েলি দখল-এর বর্ণনা আছে। ↩︎

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *