ইজরায়েলের প্যালেস্তাইনের ওপর যুদ্ধ শুরু হয়েছে ৮ অক্টোবর, যার পোশাকি নাম ‘লোহার তরোয়াল’ । তাতে এখনও অব্দি ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গাজা ভূখণ্ডে প্রায় সাত হাজার মানুষ মারা গেছে যাদের প্রায় সবাই নিরস্ত্র নাগরিক, এবং প্রায় অর্ধেক অপ্রাপ্তবয়স্ক। আমরা কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে এই যুদ্ধ সম্পর্কে জানাবোঝা করতে চাইছি। পাঠকদের কাছে আবেদন, আরো প্রশ্ন করুন, এবং উত্তরগুলি সম্পর্কে মতামত দিন। প্রথম পর্ব , দ্বিতীয় পর্ব এবং তৃতীয় পর্ব আগে প্রকাশিত হয়েছিল। এটা চতুর্থ পর্ব। সঙ্গের ছবিটি ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হানায় গাজার ধ্বংসচিত্র, ১ নভেম্বর টুইটার থেকে পাওয়া । — সম্পাদকমণ্ডলী।
১১) সব বুঝলাম, কিন্তু আমরা, মানে ভারত কি ইজরায়েলের পক্ষে না প্যালেস্তাইনের পক্ষে?
যদি এই সময় কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলিকে দিয়ে বিচার করতে হয়, তাহলে ভারত আমেরিকা বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতো ইজরায়েলের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় সংঘর্ষবিরতির আহ্বান জানিয়ে যে ভোটাভুটি হয়, তাতে ভারত ভোট দেয়নি। যদিও প্রস্তাবটি বিপুল ভোটে জয়ী হয়।

ভারতের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক অবস্থান, তারা প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতার পক্ষে। কিন্তু বিজেপি সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে ইজরায়েলের সখ্য বেড়েছে অনেকটা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক-ও অনেক বেড়েছে। মোদি নিজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ২০১৭ সালে ভূমধ্যসাগরের ধারে হাত ধরাধরি করে হেঁটে এসেছেন, যা সবাই দেখেছে। ভারত-ইজরায়েলের শাসকদল দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী বিজেপি এবং অতিদক্ষিণপন্থী জিয়নবাদী লিকুদ পার্টির মনের মিল অনেক বেশি। তাই আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ আছে, দীর্ঘদিনের অবস্থান, প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানোর অবস্থান1, কার্যত জলাঞ্জলি দিয়ে ভারত ইজরায়েলি দখলদারিরই পক্ষে নিচ্ছে। যদিও একমাস ধরে চলা যুদ্ধ তথা গাজায় চলমান গণহত্যার পর সারা পৃথিবীর মানুষের মতামত ইজরায়েলের বিরুদ্ধে চলে গেছে। তা আন্দাজ করে গত সপ্তাহে প্যালেস্তাইনি ভূখণ্ডে ইজরায়েলি সেটলমেন্ট -এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভোট দিয়েছে ভারত, ফলে প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতা ইস্যুতে ভারতবর্ষের অবস্থান এখনও ধোঁয়াশা।
ইজরায়েল ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছে যাতে তাদের দখলদারি মান্যতা পায়। একই কারণে ইজরায়েল চীন ও জাপানের সঙ্গেও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়েছে। ভারতে ইজরায়েলি কোম্পানি আছে প্রায় ৩০০-র মতো, আবার ইজরায়েলে ভারতের নানা কোম্পানি অফিস খুলে ব্যবসা করছে। ইজরায়েলে ভারতের সফটওয়ার কোম্পানিগুলির আনাগোনা সবচেয়ে বেশি, যেমন টিসিএস, উইপ্রো, ইনফোসিস, টেক-মাহিন্দ্রা ইত্যাদি। এছাড়া স্টেট ব্যাঙ্ক, সান ফার্মা, লোহিয়া গ্রুপ, জৈন ইরিগেশন, সাইসাঙ্কেত এন্টারপ্রাইজ, থিঙ্ক ফিউচার টেকনোলজি এবং সায়েন্ট-এর ব্যবসা আছে ইজরায়েলে। একইভাবে ইজরায়েলের কিছু কোম্পানি যাদের বড়ো বড়ো ব্যবসা আছে ভারতে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — টেভা ফার্মা, আইডিই, নেটাফিম, অ্যাডাম। কৃষিতে ভারতের নানা রাজ্যের সঙ্গেও ইজরায়েলের যৌথ ব্যবসা আছে। এই ব্যবসা বজায় রাখা ও বাড়ানোর জন্য ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রক এবং কৃষি মন্ত্রক সরাসরি হস্তক্ষেপ করে2।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে ইজরায়েল ও ভারতের ব্যবসায়িক যোগাযোগ সম্ভবতঃ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মনমোহন সিং-এর কংগ্রেস সরকারের আমলে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সরকার এবং ইজরায়েল সরকার তিনটি চুক্তি করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ে : ক) মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্স ইন ক্রিমিনাল ম্যাটার্স, খ) কো-অপারেশন ইন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, এবং গ) প্রটেকশন অফ ক্লাসিফায়েড ম্যাটেরিয়াল। ২০১৫ সালে বিজেপি সরকারের আমলে এই চুক্তিগুলির প্রয়োগ শুরু হয়। ওই বছর থেকে ভারতের আইপিএস অফিসার ট্রেনি-রা বছরে একবার করে এক সপ্তাহের জন্য ইজরায়েলের ন্যাশনাল পুলিশ অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং করতে যায়। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মোদির ইজরায়েল ভ্রমণের সময় ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি) এবং ইজরায়েলের ন্যাশনাল অথরিটি অফ টেকনোলজিক্যাল ইনোভেশন এর মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয় যৌথ গবেষণা ফান্ড তৈরি করার জন্য, যাতে দুই দেশই পাঁচ বছরের জন্য দেড়শো কোটি টাকা করে জমা রাখে। এছাড়া দুই দেশের মহাকাশ গবেষণা বিভাগ তিনটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০১৮ সালে ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া ইজরায়েল-ভারত সরাসরি উড়ান চালু করে (নয়া দিল্লি ও তেল-আভিভ)। এছাড়া ইজরায়েলের কাছ থেকে ডিফেন্স ইকুউইপমেন্ট ভারত প্রচুর কিনেছে, যেমন ফ্যালকন অ্যাওয়াক ইত্যাদি। ২০১৭ সালে দুই দেশের মিলিটারির মধ্যে চুক্তি হয় দুই বিলিয়ন ডলারের, যার ফলে উভয় দেশের সেনাবাহিনী যৌথ মহড়া শুরু করে।
তবে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা র’-র সঙ্গে ইজরায়েলের গুপ্তচার সংস্থা মোসাদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল সেই ইন্দিরা গান্ধীর আমলে র’ গঠনের সময় থেকেই। ২০০৫ সালে মোদি যখন তুরস্ক ভ্রমণে যান, তখন তার নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল মোসাদ এবং ব্রিটেনের এমআই৫ এর। ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার পর ইজরায়েল ভারতকে ‘নিঃশর্ত’ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ভারত ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে যায়।
১২) বেশ তাহলে আমারও ইজরায়েলের পক্ষেই থাকা উচিত, তাই না?
না। আমাদের প্যালেস্তাইনি মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে থাকা উচিত। আমরা সমালোচনা করতে পারি, তার নাচগানরত তরুন তরুনীদের ওপর নৃশংস হামলার, বা তার ইজরায়েল রাষ্ট্র বিলোপ করার আহ্বানের। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমস্ত সমালোচনা নিয়েই আমাদের প্যালেস্তাইনি জনতার মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত। এখানে ভারত রাষ্ট্রের অবস্থান আমাদের অবস্থান হবে না। এখানে মনুষ্য প্রজাতির একজন হিসেবে নিজেকে ভাবা প্রয়োজন আছে।
প্যালেস্তাইনি মুক্তি সংগ্রামের পীঠস্থান গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েল কার্যত গণহত্যা চালাচ্ছে। যুদ্ধের একমাস সাতদিন অতিক্রান্ত, এগারো হাজারেরও বেশি গাজাবাসীর মৃত্যু হয়েছে ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হানায়, যাদের নিরানব্বই দশমিক নয় নয় শতাংশ নিরস্ত্র নাগরিক। বেছে বেছে হামলা চালানো হয়েছে হাসপাতালে। আগেই বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ গাজায় সমস্ত কিছু যাওয়া আসা নিয়ন্ত্রণ করে ইজরায়েল। জ্বালানি ঢুকতে না দিয়ে, ক্ষেপণাস্ত্র মেরে বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট করে দিয়ে গাজায় বেশিরভাগ হাসপাতালকে অকেজো করে দিয়েছে ইজরায়েল3। বহু শিশু স্রেফ ইনকিউবেটরে থাকার সময় মারা গেছে। উত্তর গাজা থেকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রায় এগারো লক্ষ মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইজরায়েল রাষ্ট্র। হাসপাতালে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ফেলে বহু মানুষকে মেরে ফেলেছে, তারপর তার দায় অস্বীকার করেছে। এভাবে অগুনতি নৃশংসতার উদাহরন রেখেছে এবং গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের ইতিহাসে এই যুদ্ধ নৃশংসতায় প্রথম দিকেই থাকবে। প্রবল পরাক্রমী মার্কিন রাষ্ট্রের বরাভয় থাকায় কেউ তাদের কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না, যদিও সমস্ত দেশেই প্যালেস্তাইনের পক্ষে, যুদ্ধবিরতির পক্ষে মিছিল মিটিং হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আমাদের নিজেদের আয়নায় দেখার মতো। প্যালেস্তাইনের মুক্তি সংগ্রাম আমাদের সাহায্য ও সমর্থন ছাড়াও টিঁকে যাবে, যেভাবে প্রায় একশ’ বছর ধরে টিঁকে গেছে। কিন্তু আমরা যদি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এবং প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতার পক্ষে আজ না দাঁড়াই, তাহলে নিজেরাই নিজেদের কাছে মানুষ হিসেবে ছোটো হয়ে যাব।
১৩) ইজরায়েল যে গাজায় গণহত্যা ও গণসন্ত্রাস চালাচ্ছে, তার প্রমাণ কী?
অগুণতি প্রমাণ আছে। যেগুলি এখানে মূলধারার মিডিয়ায় আসছে তার বাইরেও অনেক আছে। অনাবাসী প্যালেস্তিনীয়দের লেখাপত্তর-এ আছে। সেগুলি ইন্টারনেট-এ পাওয়া যায়। টুইটার-এ পাওয়া যায়। জ্বালানির অভাবে তথা বিদ্যুতের অভাবে গাজার আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৭৯ জন মৃত মানুষকে গণকবর দেওয়া হয়েছে, এটা গতকালই খবরে এসেছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি ইনকিউবেটরে রাখা শিশুও আছে।
১৪) ইজরায়েল জ্ঞান বিজ্ঞান শিল্প বাণিজ্যে এত এগিয়ে, তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছু বললে কি আমার ব্যক্তিগত কেরিয়ারের ক্ষতি হবে না?
এটা সত্যিই একটা চিন্তার বিষয়। কারণ আমেরিকা, ইউরোপে দেখা যাচ্ছে, যারা ইজরায়েলের বিরোধিতা করছে, তাদের কোনও না কোনও ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে চাকরি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কর্পোরেট এবং উচ্চশিক্ষার কেরিয়ারের ক্ষেত্রে। কারণ ইজরায়েলি রাষ্ট্র এবং ইজরায়েলি কর্পোরেটরা যথেষ্ট প্রভাবশালী ও নানা ধরনের শিল্পে ও বিজ্ঞান গবেষণায় ইজরায়েলি রাষ্ট্র ও কট্টর জিওনবাদীদের প্রভাব যথেষ্ট। উদাহরণ স্বরূপ, একটি বিখ্যার বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ই-লাইফ এর মুখ্য সম্পাদক পদ থেকে একজন বিজ্ঞানীকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ইজরায়েলের গাজা আক্রমণের প্রতিবাদ করেছিলেন।

এছাড়া, ইজরায়েলের বিরোধিতাকে ইহুদিবিদ্বেষ বা অ্যান্টিসেমিটিজম হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক বছরে ইজরায়েল রাষ্ট্র নানা কূটনৈতিক কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে বিশ্বের নানা জায়গায় ইজরায়েল রাষ্ট্রের বিরোধিতাকে ইহুদিবিদ্বেষের সমান করে দেখানোর নানা আইনি বন্দোবস্ত তৈরি করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার নাজি হলোকাস্টের স্মৃতিকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। যদিও আমাদের দেশে এসবের কোনও প্রভাব নেই, কিন্তু ইউরোপে বিশেষ করে এর প্রভাব রয়েছে, কারণ সেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার মানুষেরা এখনও জীবিত, অর্থাৎ নাজি হলোকাস্ট বা হিটলারের ইহুদি গণহত্যার স্মৃতি এখনও জীবন্ত। তবে এসবের বিরুদ্ধে বহু মানুষ মুখ খুলছে। ইজরায়েল ও মার্কিন লালচক্ষুকে উপেক্ষা করেই।
যদি কেরিয়ারের কারণে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারা যায়, তাহলে ব্যক্তিগত পরিসরে আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবের মধ্যে ইজরায়েল রাষ্ট্রের প্যালেস্তাইন অবরোধ, যুদ্ধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করা যায়।
১৫) ইজরায়েলের বিরোধিতা মানে কি ইহুদি বিরোধিতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না? যে ইহুদিদের ওপর হিটলার গণহত্যা চালিয়েছিল ?
গত শতাব্দীর শুরু থেকেই ইহুদিরা ইউরোপ থেকে নানাভাবে অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছিল। হিটলারের সময় তা চরমে ওঠে। তারপর তারা আরবভূমিতে এসে বসতি স্থাপন করে। প্রথম দিকে ইউরোপিয়ানদের একটা বড়ো অংশ ইহুদিদের প্রতি সহানুভূতি এবং অন্যায়ের প্রতিকার হিসেবে আরবভূমিতে ইজরায়েলি সেটলমেন্ট সমর্থন করেছিল। কিন্তু সেই ইজরায়েলি বসতি হয়ে দাঁড়ায় জিয়নবাদী দখলদার রাষ্ট্র। ইউরোপ আমেরিকা তথা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু ইহুদি এই দখলদার ইজরায়েল রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মত নয়। তারা ইজরায়েলের গাজা আক্রমণেরও বিরুদ্ধে। খোদ ইজরায়েলের বহু ইহুদি ইজরায়েলের প্যালেস্তাইন দখলের বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে। কিন্তু ইজরায়েলের জিয়নবাদী প্রতিষ্ঠান সেখানকার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করে, প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের যে দুর্বলতা আছেই।
১৬) বেশ। কিন্তু আমরা এতদূরে থাকা সামান্য মানুষ হিসেবে কীই বা করতে পারি ?
ক) আমরা ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন এর ইতিহাস পড়তে পারি। প্যালেস্তাইন অবরোধ এবং দখল-এর ইতিহাস পড়তে পারি। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ও সাধারণভাবে প্যালেস্তাইনি মানুষদের গান গল্প উপন্যাস কবিতা সিনেমা ছবি দেখতে ও শুনতে পারি। প্রিয়জনদের সেগুলো উপহার দিতে পারি।
খ) আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে ইজরায়েলি রাষ্ট্রের যুদ্ধের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করতে পারি। প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে মতপ্রকাশ করতে পারি।
গ) সোস্যাল মিডিয়ায় ইজরায়েলি রাষ্ট্রের গণহত্যার বিরুদ্ধে সরব হতে পারি।
ঘ) ইজরায়েলি রাষ্ট্রের প্যালেস্তাইন যুদ্ধ ও দখলের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল বা অন্যান্য প্রতিবাদে সামিল হতে পারি।
ঙ) আমাদের এখানকার বেশ কিছু বেসরকারি কোম্পানি, যেমন টিসিএস, উইপ্রো, ইনফোসিস, টেক মাহিন্দ্রা, সান ফার্মা ইত্যাদির ইজরায়েলে বিনিয়োগ ও অফিস আছে। তাদের চিঠি লিখে বলতে পারি তারা যেন ইজরায়েলের সাথে ব্যবসা বন্ধ করে।
চ) ভারত রাষ্ট্রের সঙ্গে ইজরায়েল রাষ্ট্রের নানা চুক্তি আছে। আমরা ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে বলতে পারি, সেই চুক্তিগুলি বাতিল করতে।
ছ) বেশ কিছু ইজরায়েলি কর্পোরেট ভারতে ব্যবসা করে। আমরা সেগুলোর পণ্য বর্জন করতে পারি।
জ) বেশ কিছু মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্পোরেট খোলাখুলি ইজরায়েল রাষ্ট্রের এই যুদ্ধকে সমর্থন করছে। আমরা সেই কর্পোরেটদের পণ্যগুলি বর্জন করতে পারি।
শেষ