“নতুন’ বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশের নিশ্চয়তা চায় মানুষ’

প্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড় করানো। সংবিধানসহ রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক জায়গাগুলোতে গণতান্ত্রিক ধরনের সংস্কার করা। সামনে যেন হাসিনার মতো ভয়াবহ কিছুর মোকাবিলা না করতে হয়, ফ্যাসিজমের জন্ম না হয়, তা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কারের ভেতর দিয়ে নিশ্চিত করা। আদালতকে স্বাধীনভাবে চলতে দেওয়া, প্রেসকে প্রেসের মতো কাজ করতে দেওয়া। সামগ্রিক একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ। যেটা নিশ্চিত হলে আর্থিক অনেক ব্যাপার এমনিতেই সমাধান হয়ে যায়।

প্রশ্নোত্তরে প্যালেস্তাইনের ওপর ইজরায়েলের যুদ্ধ (২০২৩) : আমরা কী করতে পারি ?

ক) আমরা প্যালেস্তাইন অবরোধ এবং দখল-এর ইতিহাস, প্যালেস্তাইনি মানুষদের গান গল্প উপন্যাস কবিতা সিনেমা ছবি পড়তে, দেখতে ও শুনতে পারি। প্রিয়জনদের সেগুলো উপহার দিতে পারি।

খ) আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে ইজরায়েলি রাষ্ট্রের যুদ্ধের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করতে পারি। প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে মতপ্রকাশ করতে পারি।

গ) সোস্যাল মিডিয়ায় ইজরায়েলি রাষ্ট্রের গণহত্যার বিরুদ্ধে সরব হতে পারি।

ঘ) ইজরায়েলি রাষ্ট্রের প্যালেস্তাইন যুদ্ধ ও দখলের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল বা অন্যান্য প্রতিবাদে সামিল হতে পারি।

ঙ) আমাদের এখানকার বেশ কিছু বেসরকারি কোম্পানি, যেমন টিসিএস, উইপ্রো, ইনফোসিস, টেক মাহিন্দ্রা, সান ফার্মা ইত্যাদির ইজরায়েলে বিনিয়োগ ও অফিস আছে। তাদের চিঠি লিখে বলতে পারি তারা যেন ইজরায়েলের সাথে ব্যবসা বন্ধ করে।

চ) ভারত রাষ্ট্রের সঙ্গে ইজরায়েল রাষ্ট্রের নানা চুক্তি আছে। আমরা ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে বলতে পারি, সেই চুক্তিগুলি বাতিল করতে।

ছ) বেশ কিছু ইজরায়েলি কর্পোরেট ভারতে ব্যবসা করে। আমরা সেগুলোর পণ্য বর্জন করতে পারি।

জ) বেশ কিছু মার্কিন ও ইউরোপীয় কর্পোরেট খোলাখুলি ইজরায়েল রাষ্ট্রের এই যুদ্ধকে সমর্থন করছে। আমরা সেই কর্পোরেটদের পণ্যগুলি বর্জন করতে পারি।

প্রশ্নোত্তরে প্যালেস্তাইনের ওপর ইজরায়েলের যুদ্ধ (২০২৩) : প্যালেস্তাইনের মুক্তি-সংগ্রাম কি মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক রাজনীতির বোড়ে হয়ে যায়নি ?

প্যালেস্তিনীয় মুক্তি-সংগ্রাম ইসলামিক রাজনীতির আভ্যন্তরীন বিষয় নয়, বরং তা ছাপিয়ে। তা একটি জাতিসত্ত্বার বিলীন হয়ে যাবার বিরুদ্ধে সুদীর্ঘ, কষ্টকর এবং আত্মত্যাগে পরিপূর্ণ এক লড়াই। সেই কারণেই পৃথিবীর নানা দেশের বহু মানুষ, যারা প্যালেস্তিনীয় নয়, ইসলামিস্ট নয়, মুসলিম নয় — তারাও প্যালেস্তিনীয় মুক্তি-সংগ্রামের সংহতিতে রয়েছে। সারা পৃথিবীতে বহু মিছিল তারা করে চলেছে, যেগুলি শুধু ইজরায়েলের নৃশংস যুদ্ধ (২০২৩) বন্ধ করার দাবি তুলেই ক্ষান্ত থাকছে না, একইসাথে প্যালেস্তাইনকে ইজরায়েলের অবরোধমুক্ত করার দাবিও তুলছে।

প্রশ্নোত্তরে প্যালেস্তাইনের ওপর ইজরায়েলের যুদ্ধ (২০২৩) : প্যালেস্তাইনিরা কি জঙ্গী স্বাধীনতা সংগ্রাম চায়?

২০০৬ সালে প্যালেস্তাইনের স্বায়ত্বশাসন কর্তৃপক্ষের নির্বাচন হয়, তাতে সারা পৃথিবীকে অবাক করে বিরোধী হামাস বিপুলভাবে জিতে যায়। ভূতপূর্ব শাসক সংগঠন ফাতা দ্বিতীয় স্থান পায়। হামাস ও ফাতা-র মিলিজুলি ‘প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ’ তৈরির প্রয়াস ব্যর্থ হয় এবং গৃহযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ২০০৭ সালে গাজা ভূখণ্ডটির ক্ষমতা দখল করে নেয় হামাস। তারা ইজরায়েল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ভিত্তিক সমাধান বাতিল করে দেয় এবং ষাটের দশকে জঙ্গী প্যালেস্তাইনি স্বাধীনতা আন্দোলনের যে দাবি, জর্ডন নদী থেকে ভূমধ্যসাগর অবদি পুরো প্যালেস্তাইনের মুক্তিকে লক্ষ্য বলে ঘোষণা করে। শুরু হয় গাজা থেকে হামাসের নেতৃত্বে জঙ্গী তথা হিংসাত্মক স্বাধীনতা আন্দোলন।

প্রশ্নোত্তরে প্যালেস্তাইনের ওপর ইজরায়েলের যুদ্ধ (২০২৩) : যুদ্ধ শুরু হল কেন?

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব সম্প্রতি বলেছেন, হামাসের হামলা আকাশ থেকে পড়েনি, তার কারণ আছে, তা হল প্যালেস্তিনীয়দের দম আটকানো ইজরায়েলি অবরোধ। আমাদের ভারতবাসীদেরও প্যালেস্তিনীয় মুক্তি সংগ্রামকে সামগ্রিকভাবে সমর্থন করা প্রয়োজন। ঔপনিবেশিক শাসনে দুশো বছর কাটানো এবং সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে তার থেকে মুক্তির ইতিহাস আছে আমাদের, ফলে তা বিস্মৃত না হলে আমাদের প্যালেস্তিনীয়দের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া স্বাভাবিক।