করোনা অতিমারি মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা নির্ভর একটি ইতিবাচক খসড়া প্রস্তাব — সকলের বিবেচনার জন্য

আমরা এই পয়েন্টগুলি বিবেচনায় আনার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, সরকারি সংস্থা, অসরকারি সংস্থা, গণসংগঠন এবং ব্যাপকতর জনগণ-কে আহ্বান করছি। এই বিষয়গুলিতে যে কোনো বিতর্ক এবং আলোচনার-ও আহ্বান রাখছি। আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি যে মানুষের প্রয়াসের মাধ্যমে এই রোগকে কব্জা করে ফেলা সম্ভব।

“কমিউনিটি মেডিসিনের প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে চিকিৎসা করলে করোনায় অক্সিজেন সাপোর্ট বা হাসপাতালে যাবার দরকার প্রায় নেই এবং মৃত্যু পুরোপুরি আটকানো সম্ভব”

কোভিড-১৯ রোগের মোকাবিলা এই কমিউনিটি মেডিসিনের প্রয়োজনীয়তাকেই তুলে ধরল, বোঝালো যে আমাদের কমিউনিটি মেডিসিনের দিকেই যেতে হবে। যদি সরকার করে, তাহলে ভালো। নাহলে আমাদেরকেই করতে হবে সে ব্যবস্থা। কারণ নিজেদের স্বাস্থ্য নিজেদের হাতে।

“দেখেছিলাম, এমনকি ডাক্তাররাও এপিডেমিক-এর সংজ্ঞা ভুলে বসে আছে”

এপিডেমিক মানে মহামারি। আর প্যানডেমিক মানে অতিমারি, যখন এপিডেমিক একটা দেশ ছাড়িয়ে আবিশ্ব ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ মহামারি বা এপিডেমিক বলতে বোঝে, এমন একটা রোগ, যা হলেই লোকে মারা যাবে, এবং শ’য়ে শ’য়ে মানুষ মারা যাবে। কিন্তু এপিডেমিকের সংজ্ঞা তাতে কিন্তু মৃত্যুর কোনো উল্লেখই নেই।

করোনা ও ভারত : গণ টিকাকরণের দাবি নিয়ে সংশয় জরুরি

এই অতিমারীর সময়ে কম বেশি সকলেই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। অনেকে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, অনেকেই প্রিয়জনকে হারানোর আশংকা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকের কাছেই টিকা একমাত্র ভরসার জায়গা। মনের এই অবস্থায় নিরপেক্ষ যুক্তি দিয়ে আলোচনা করা শক্ত, পড়তেও ভাল লাগার কথা নয় বিশেষত যেখানে আরও ভাল কোনও সমাধান সুনির্দিষ্ট করে বলার সুযোগ নেই। মানুষের যাপন আবেগবর্জিত নয় তাই এই মানসিক অবস্থাকে সম্মান করেই নিচের আলোচনা বিপর্যস্ত মন নিয়ে না পড়াই ভাল হবে।

একটি অতিমারি (?), টিকা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য

টিকা ওষুধ নয় যা অসুস্থ মানুষকে সারিয়ে তোলার জন্য দেওয়া হয়, টিকা সুস্থ মানুষকে দেওয়া হয় দ্রুত হার্ড ইমিউনিটি তৈরির জন্য। যদি সাধারণ ভাবে হার্ড ইমিউনিটি থেকেই থাকে তবে নানা তথ্য-ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি এতগুলি টিকাকে এমনকি গাইডলাইন বদলেও ছাড়পত্র কেন দেওয়া হল?

আমাদের দেশে করোনার গণ টীকার কি কোনো প্রয়োজন আছে?

করোনার আতঙ্ক টিঁকে থাকা ভারতবর্ষের পুঁজিপতিদের এবং মন্দাবিধ্বস্ত অর্থনীতি নিয়ে বিপাকে পড়া মোদি সরকারের আজ সবিশেষ প্রয়োজন। ভ্যাক্সিন্যাশনালিজমের সমালোচনার আড়াল থেকে গোঁফে তা দিচ্ছে ভ্যাক্সিক্যাপিটালিজম।

করোনা ও পরিযায়ী শ্রমিক : মিডিয়ার আন্তরিকতা, সরকারের নিষ্ঠুরতা ও বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা ইতিহাসে লেখা থাকবে

৩১ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কথায় সন্তুষ্ট হলেন। এবং ভারত সরকারের পক্ষে রায় দিলেন। ফেক নিউজ আটকাবার রাস্তায় শ্রমিক প্রকৃত অর্থেই ফেক হয়ে রইল। ২ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র দপ্তর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ সহ সমস্ত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ পাঠালো, যেন শ্রমিকদের নিয়ে একটিও ফেক নিউজ প্রকাশিত না হতে পারে।

করোনা ও অর্থনীতি : করতে পারি, কিন্তু কেন করব

আমাদের প্রস্তাব কখনোই অর্থনীতির ভালোর দিক ভেবে হতে পারে না। বরং আমাদের ভাবা উচিত ব্যক্তি শ্রমিক/বেকারের স্বার্থ। যে ব্যক্তি শ্রমিক/বেকার আমি নিজেও। ব্যক্তি শ্রমিক/বেকারের স্বার্থের চেয়ে পৃথক স্বার্থ আমাদের থাকা উচিত না। আমরা কীভাবে এই বিপদের মোলাকাৎ ও মোকাবিলা করছি, সেই অভিজ্ঞতাই তৈরি করবে করোনা-উত্তর আমাদের এখানকার উত্তর-পুঁজিবাদে পদার্পনের পন্থা।

করোনা ও সুরাতের হীরের গয়না

হিসেবটা এরকম, ন্যুনতম পরিযায়ী শ্রমিক দিয়ে ১২ ঘন্টা খাটিয়ে বিল্ডিং-গুলো বানিয়ে নেওয়া। পালিশ কাটিং আপাততঃ বন্ধ থাক। হীরে বুর্জোয়ারা, দেশে যাতে আর কাঁচা হীরে না ঢোকে পালিশের জন্য, তার জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে তদ্বির করে ফেলেছে। আর স্টিমুলাসের দাবিও করা হয়ে গেছে, এই বারো ঘন্টা খাটানো হচ্ছে যাদের জোর করে ধরে রেখে, তাদের মাইনে বাবদ।